সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জে এলজিইডির রাস্তা মেরামত কাজে ব্যবহারকৃত ঠিকাদারের প্লান ও ডাস্ট মেশিন চালানোর কারণে তা থেকে নির্গত আগুনের ফুলকি, কালো ধোঁয়ার সাথে ছাই ও পাথর কুঁচিতে হুমকির মুখে ফসলি জমি এলাকার পরিবেশ।
সরজমিনে দেখা যায়, মাসব্যাপী দিনরাত সমানতালে প্লান ও ডাস্ট মেশিনের নির্গত আগুনের ফুলকি, কালো ধোঁয়া, সাথে ছাই ও পাথর কুঁচিতে হুমকির মুখে পড়েছে আবাদি জমির ফসল গাছপালা ঘরবাড়ি। সেই সাথে আগুনের তাপে পুড়ে মরে যাচ্ছে ফসল ও গাছপালা।
এতে ঐ এলাকায় বসবাসরত প্রায় শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কেউ কিছু বললে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় বলেও জানা যায়।
মেশিন স্হাপন করা এলাকা সদরের কুঁড়ি পাড়া গ্রামের আক্তার, সোনা উদ্দিন, রুস্তমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, এই মেশিন চালানোর কারণে কালো ধোঁয়ায় আমাদের বাড়িঘর অন্ধকার হয়ে থাকে। ছাই ও কুঁচি পাথরের বা বালির কারণে কোনো কিছুই রান্না বান্না করে খাওয়া যায় না। পোশাক আশাক, বিছানা, হাঁড়ি পাতিলে মিনিটের মধ্যে ছাই ও পাথর কুঁচি বা বালির স্তূপ হয়ে যায়। আবাদি জমির ফসল ও ফলসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ এবং গবাদিপশু পাখি এর কারণে মরে যাচ্ছে। এতে কয়েকদিনেই শিশু বৃদ্ধসহ অনেকের শ্বাস প্রশ্বাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা কিছু বললে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
কাজের ক্ষেত্রেও কিছু অনিয়ম ও ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। সঠিক গ্রেটেশন অনুযায়ী পাথর দেওয়া হচ্ছে না। পাথরের ডাস্টের ভিতর মিক্সিংয়ে বালির পরিমান বেশি দেওয়া হচ্ছে। সঠিক কম্পেক্টে কাজ করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডি সুত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমান্তবাজার থেকে মহিষামুড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত এক কোটি ৭৪ লাখ টাকার ২ কি, ৪০০ মিটার সড়কের রিপিয়ারিং/মেইনটেইন্সের কাজ পান নাটোরের মেসার্স মিম ডেভলপমেন্ট ইন্জিনিয়ারিং লিমিটেড। সেই কাজ করছেন নাটোরের মেসার্স মিতা কনস্ট্রাকশন। উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ করার জন্য নির্মাণ সামগ্রী রাখাসহ প্লান ও ডাস্ট মেশিন বসানোর জায়গা হিসেবে কুঁড়ি পাড়া জনবসতি এলাকায় স্হানীয় আশরাফুল ইসলাম নামের একজনের নিকট থেকে জায়গা ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বিজয় কুমার দাস পরিবেশ দুষিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও কাজে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সিডিউল অনুযায়ীই কাজ করা হচ্ছে। সদর উপজেলা ইন্জিনিয়ার (এলজিইডি) আবুল কালাম আজাদ অনিয়মের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য সাময়িক কিছু অসুবিধা মেনে নিতে হবে। তা না হলে আমাদের কাজ করা সম্ভব হবে না।
এলজিইডি র নির্বাহী প্রকৌশলী মো শফিকুল ইসলাম জানান, জনসাধারণের অসুবিধা হয় বা জনবসতি এলাকায় উক্ত মেশিন বসানো যাবে না। ফাঁকা জায়গায় বা জনবসতিহীন এলাকায় এমন মেশিন বসিয়ে কাজ করতে হবে। যদি এর কোনো ব্যতয় ঘটে এবং কাজে অনিয়ম হয় তাহলে বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।
Leave a Reply