জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা। তাঁতের প্রয়োজনীয় কাঁচা মালের অন্যতম উপকরণ হলো সুতা। এই সুতাকে ব্যবহার করতে হলে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও রংয়ের মিশ্রনে প্রক্রিয়াজাতরণ করে কাপড় উৎপাদন করতে হয়।
তাঁত শিল্পের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেলকুচি উপজেলায় ৩০-৩৫ টি সুতা প্রসেস কারখানা গড়ে উঠেছে। যার কোনটিরও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। অনুমোদন বিহীন অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় ব্যাপক ভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।
প্রসেস মিলের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রং ও বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যালের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে স্থানীয় ডোবা, পুকুর, নদীর শাখাসহ আবাদি জমিতে। ফলে জনস্বাস্থ্য ব্যাপক হুমকিতে রয়েছে। দিনের আলোতে প্রসেস মিলের বর্জ্যের গন্ধ তেমন লাগব না হলেও সন্ধ্যার পর বাতাসে দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পরে। প্রসেস মিলের কেমিক্যালের বর্জ্যের গন্ধে আশেপাশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। এদিকে সরকারী নিদের্শনা অনুযায়ী ইটিপি প্লান ছাড়া ডাইং পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দু-একটি ছাড়া প্রায় সবগুলো ইটিপি প্লান ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।
বেলকুচি উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত মজনু ডাইংসহ আরও ৩টি সুতার ডাইং রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব ডাইংয়ের কোন বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ওয়াবধা বাঁধের খালে। প্রসেস মিলের কেমিক্যাল ও রং মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধে আশপাশ দিয়ে হাটা যায় না।
এসব প্রসেস কারখানার পাশের কিছু ব্যক্তির সাথে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে জানান, প্রসেস মিলের বর্জ্যের গন্ধে আমারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ব্যাপক দুর্গন্ধ ছড়ায়। সারাদিন সুতা প্রসেস করার পর যখন কেমিক্যাল বর্জ্যেরপানি সন্ধ্যায় ওয়াবধার খালে ফেলা হয়, ঠিক তখনই বাতাসে চরম দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমাদের এখনে বসবাস করাই কষ্ট হচ্ছে। মিলের আশপাশের বাড়ির টিউবওয়েলের পানি প্রাণ করা যায় না। পানি দিয়ে চরম দুর্গন্ধ। স্থানীয় প্রসেস মিল মালিকগণ প্রভালশালী হওয়ায় আমরা কিছু বলতেও পারি না। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের নিকট প্রতিকার চেয়ে বারবার দরখাস্ত দিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ না পেলেও মৌখিক ভাবে অভিযোগ পেয়েছি। আর অভিযোগের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুরের নিকট জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, আমি এখানে নতুন দায়িত্ব গ্রহন করেছি। সবকিছু গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। তবে আমি কারখানা দ্রুত পরিদর্শন করে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply