জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার আদাচাকীতে দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম্য শালিসে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে ধামাচাপার চেষ্টা করছে।
রবিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ৩ টার সময় আদাচাকী উত্তরপাড়া জামাল উদ্দীনের বাড়িতে তেতুঁল কুড়াতে যায় মাদ্রাসা ছাত্রীরা। ঐ বাড়িতে থাকা জামাল উদ্দীন (৬৫) এসে ছাত্রীদের ফুসলিয়ে টিভি দেখার কথা বলে রুমে নিয়ে যান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে একজন রুম থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে লোকসমাগম হলে তারা রক্ষা পান। ভুক্তভোগীরা উপজেরার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনগাঁতি গ্রামের মেয়ে। তারা আদাচাকী উত্তর পাড়া আল হেরা দারুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার শিশু শ্রেণী ও ১ম শ্রেণীর ছাত্রী। এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত জামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও একাধিক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আদাচাকী আল হেরা দারুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম মওলানা শহীদুল ইসলাম জানান, তারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হওয়ায় তাদের অভিভাবদের সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়। ইউএনও মহোদয় বেলকুচি থানাতে বিষয়টি অবহিত করেন। পরবর্তীতে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ৩ বার সমঝোতা করার চেষ্টা করেছেন একটি মহল। এমনকি বিষয়টি নিউজে প্রকাশ না করার জন্য প্রতিবেদকে বারণ করা হয়। সোমবার (২৪ অক্টোবর) গ্রাম্য সালিশী বৈঠকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও শারীরিকভাবে জুতার আঘাত রায় হয় অভিযুক্ত জামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে । এখনো পর্যন্ত জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রদান করা হয়নি। জনশ্রুতি রয়েছে বিষয়টি সমঝোতা করতে অভিভাবকদের চাপ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্থানীয় মাতব্বর বলেন, ঘটনাটা যেহেতু গ্রামের তাই বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে সমঝোতা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা মামলা তোলার খরচ-খরচা বাদে যা থাকবে সেই টাকা ভুক্তভোগী পরিবারদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
অথচ ধর্ষণ চেষ্টার মামলা ও অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজমিলুর রহমান জানান, আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ বা মামলা হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।
অপরদিকে ঘটনার বিষয়ে ৩ নং ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সালিশে তাকে ডাকা হয়নি যার ফলে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তিনি অবগত নন।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, আদাচাকী মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম, ভুক্তভোগী ছাত্রীরা ও অভিভাবকগন ঘটনা সম্পর্কে জানালে তিনি অবগত হন। মেয়েদের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি ইভটিজিং বলে আখ্যাদেন। পরবর্তীতে তিনি বেলকুচি থানাকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, একজন ৬৫ বছরের পুরুষ মানুষ ইভটিজিং করতে কি ২ জন মেয়েকে রুমে ডেকে নেয়। বিষয়টি জলঘোলা করে একটি মহল ফায়দা লুটতে ব্যস্ত। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেজন্য তদন্ত করে সঠিক বিচার হওয়া উচিত।
Leave a Reply