জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
বিধবা এক নারীর যৌন হয়রানীর শিকারে স্থানীয় প্রধানগনদের সালিশের রায়ে তার ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে তিন লাখ টাকা। যার মধ্যে ভুক্তভোগী ঐ নারী বুঝে পেয়েছে দেড় লাখ টাকা। বাকী টাকা গ্রাম প্রধানদের পকেটে। এমনই ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের মবুপুর গ্রামে।
স্থানীয় একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়, মবুপুর গ্রামের সাহা’র ছেলে মুদি দোকানি আ: রহিমের সাথে মৃত নজরুল ইসলামের স্ত্রী’র সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় স্থানীয়দের কাছে হাতে নাতে ধরা খায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় মুদি দোকানি রহিম গ্রাম প্রধান হাজী ফজলুর রহমান, রেজাউল করিম, সাইফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে ডেকে এনে একটি পাতানো গ্রাম্য সালিসি বৈঠক করেন। এতে তার কৃতকর্মের জন্য ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভুক্তভোগী ওই নারীকে দেড়লাখ টাকা প্রধানরা বুঝিয়ে দেয়। আর বাকী টাকা যায় প্রধানদের পকেটে।
এবিষয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে অভিযুক্ত মুদি দোকানি আ: রহিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গ্রাম প্রধান রেজাউল করিম জানান, আমি এবিষয়ে কিছুই জাননি না। একদিন হাজী ফজলুর রহমান চা খাওয়ার কথা বলে লোক মারফত রহিমের বাড়িতে আমাকে যেতে বলেন। আমি ওখানে গিয়ে দেখি একটা সালিসি বৈঠক হচ্ছে। ঐ বৈঠকের সভাপতি ছিলেন হাজী ফজলুর রহমান। তার মাধ্যমে বিচারের রায় হয়। রায়ে জরিমানার দেড়লাখ টাকা ভুক্তভোগী নারীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন , যেহেতু গ্রাম প্রধানরা একটা রায় দিয়েছেন তাই এবিষয়ে কোন নিউজ না করাই ভালো। নিউজ করলে প্রধানদের ইজ্জত থাকবে না বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বরকততুল্লাহ বলেন, আমি লোকমুখে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কিন্তু তারা আমাকে বলেনি। আমাকে মানেনা বিধায় না জানিয়ে এই বিচার কার্যক্রম শেষ করেছে। শুনেছি রহিমের ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে তারা। এদের একটা সিন্ডিকেট আছে। তাদের কাজ শুধু এগুলো করে বেড়ানো।
বেলকুচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল বাসার জানান, যৌন হয়রানির ঘটনায় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করতে পারেনা। আইনকে অমান্য করে তারা মিমাংসা করেছে। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply