জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
একজন আধুনিক কেঁচো চাষি ও আধুনিক কৃষক টুক্কু মুক্তার। যিনি বছর খানেক পূর্বে সিরাজগঞ্জ সদর থেকে সরকারি প্রশিক্ষণ নিয়ে সরকারি বরাদ্দে ৩ টি রিং দিয়ে প্রাথমিকভাবে শুরু করেছিলেন কেঁচো সারের খামার। পরবর্তীতে তার সফলতা দেখে কেঁচো সারের উপরে আবারও প্রশিক্ষণ নিয়ে তাকে আরও ১০ টি রিং দেয় সরকারি বরাদ্দে।
৬ মাসেই টুক্কু মুক্তারের কাছে রিং পদ্ধতিতে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি ব্যয়বহুল ও বিরক্তিকর মনে হয়েছিল। তাই কড্ডার মোড় সংলগ্ন হাট পোড়াবাড়ীর এই আধুনিক কৃষক ও খামারি স্বল্প খরচে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির পদ্ধতি খুঁজতে থাকেন ফেসবুক গুগলে ও ইউটিউবে।
অবশেষে ভিয়েতনাম পদ্ধতি লক্ষ করে কেঁচো বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছন। ভিয়েতনামি পদ্ধতিতে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরীর ক্ষেত্রে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ও বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত রুস্তম আলী ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মেহেদী হাসান তাকে প্রথম থেকেই সাহস জুগিয়ে আসছিলেন। ইতিমধ্যে টুক্কু মুক্তারের কেঁচো খামার পরিদর্শন করেন তারা।
বগুড়া অঞ্চল কৃষি অধিদপতরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বাবলু কুমার সূত্রধর, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আ,জ,ম আহসান শহীদ সরকার, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রোস্তম আলী, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা, উপ-সহকারি কৃষি অফিসার এস,এম মেহেদী হাসান।
উপস্থিত সকলেই সবাই একমত পোষণ করে বলেন, এই পদ্ধতিতে কেঁচো সার তৈরি করলে একজন খামারি খুব সহজেই লাভবান হবেন এবং সর্বোচ্চ কেঁচো সার ও কেঁচোর প্রোডাকশন বৃদ্ধি পাবে। নিচে সাধারণ পলি মুরি দিয়ে ইটের বেড়া গবরের উপরে পাটের রিজেক্ট ছালা দিয়েই এ পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় খুব সহজেই, যা অনেকটাই খুব সাশ্রয়ী পদ্ধতি। যেখান থেকে থেকে টুক্কু মুক্তারের টনকে টন কেঁচো সার হয়। টুক্কু মুক্তারের কেঁচো সার ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জসহ অন্যান্য জেলাতেও ব্যাপক সাড়া মিলছে। কেঁচো সারের সবচেয়ে বড় উপকরণ গোবর। এতো গবর টুক্কু মুক্তার কেমন করে সংগ্রহ করেন জানতে চাইলে তিনি জানান, তার নিজের খামার থেকে এবং পাশে যারা খামারি রয়েছেন তাদের কাছ থেকে গরু প্রতি ১০০ টাকা মাসুরা দিয়ে এ গোবরগুলো তিনি সংগ্রহ করে থাকেন।
জানতে চাইলে তিনি জানান, ড্রাগন চাষী, ছাদ বাগানি ও সবজি চাষীরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে কেঁচো সার ক্রয় করে থাকেন। বর্তমানে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়
এ সার সিরাজগঞ্জসহ পুরো দেশে ব্যাপক চাহিদার কথা জানান আধুনিক এই কেঁচো চাষা। বর্তমানে কেঁচো সার ও কেঁচোর বাজার দর জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইকারি ১ কেজি কেঁচো সার বিক্রি করে ১৫ টাকা, ১ কেজি কেঁচো বিক্রি হয় ১ হাজার টাকায়।
Leave a Reply